রাজশাহী-১(গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনো অনেক দূরে হলেও নির্বাচনী উত্তাপ স্পষ্টভাবে অনুভূত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে—এমন ধারণা থেকে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো ইতোমধ্যে মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৃণমূলে জোরেশোরে গণসংযোগ ও প্রচারণা শুরু করেছেন। জামায়াতের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন অধ্যাপক মুজিবুর রহমান জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যেই এই আসনে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। দলটির নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। তিনি ১৯৮৬ সালে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে আবারও ভোটের ময়দানে ফিরেছেন। বর্তমানে গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলাজুড়ে তাঁর নিয়মিত গণসংযোগ চলছে। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “জনগণ এবার জামায়াতকে আবারও সুযোগ দেবে। আমাদের অতীতের কাজ ও নীতি দেখে মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে। বিএনপিতে প্রার্থীদের লম্বা তালিকা, নেতৃত্বে বিভক্তি অন্যদিকে বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে মাঠে সক্রিয় বেশ কয়েকজন নেতার নাম আলোচনায় উঠে এসেছে। এর মধ্যে আছেন:অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেকতানোর-গোদাগাড়ীর জনপ্রিয় আইনজীবী ও করোনা সময়ে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী
ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন ঢাকায় সক্রিয় আইনজীবী ও গোদাগাড়ী অঞ্চলের বাসিন্দা্আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সালাম বিপ্লব – দীর্ঘদিনের বিএনপি নেতা
সাজেদুর রহমান খান মার্কনি – স্থানীয় নেতা ও মনোনয়নপ্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন – বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাও সামরিকঅভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থী গ্রুপিং ও সহিংসতা, দুটি হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রার্থীতা ঘিরে তানোর উপজেলা বিএনপিতে তীব্র গ্রুপিং তৈরি হয়েছে। দলের অভ্যন্তরে অন্তর্দ্বন্দ্ব এতটাই প্রকট যে, সম্প্রতি তানোরে দুটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। নিহতরা শরীফ উদ্দিনের বিরোধী গ্রুপের সদস্য বলে জানা গেছে।
শামসুল আলম, তানোর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব, অভিযোগ করে বলেন, “অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন দলের ভেতর বিভক্তি সৃষ্টি করছেন। তাঁর প্রত্যক্ষ মদদে দুটি হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ। অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের নেতাকর্মী ও পরিবারগুলোর পাশে আছি। দলের সংকটকালীন সময়েও আমি মাঠে থেকেছি। সাজেদুর রহমান খান মার্কনি বলেন,দল এবার ভেবেচিন্তে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী দেবে। যারা বিভক্তি সৃষ্টি করছেন, তাদের মনোনয়নের সম্ভাবনা নেই। গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বলেন, “ক্লিন ইমেজের প্রার্থী ছাড়া এই আসনে বিজয়ী হওয়া কঠিন হবে। জনগণ এখন নেতার ব্যক্তি ইমেজ দেখে ভোট দেয়। শরীফ উদ্দিনের পাল্টা দাবি অভিযোগের জবাবে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন বলেন, “এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি দলের জন্য কাজ করছি, নেতাকর্মীরা আমার পক্ষেই আছে। কারো বিরুদ্ধে আমি কোনো ষড়যন্ত্র করিনি। এনসিপি ও অন্যান্য দলের তৎপরতা নেই এই আসনে এখনো এনসিপি কিংবা অন্য কোনো ছোট দলের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। ফলে নির্বাচন মূলত বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ইতোমধ্যে মাঠে সক্রিয় বিএনপিতে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী: তারেক, মিলন, বিপ্লব, মার্কনি, শরীফ উদ্দিন অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে দলের ক্ষতি, দুটি হত্যাকাণ্ডে উত্তপ্ত রাজনীতি
ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খুঁজছে বিএনপি শরীফ উদ্দিন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে, তবে তাঁর পক্ষে দাবি করছেন অনেকে
এই আসনে আগামী নির্বাচনে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর অভ্যন্তরীণ সংঘাত ও জনসম্পৃক্ততা কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।