রাজশাহীর কাটাখালি বাজার সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করেন মো: রেজাউল করিম। জন্মের পর থেকেই দুই চোখের আলো হারিয়ে অন্ধত্ব নিয়ে জীবন শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু জীবনের এই কঠিন বাস্তবতাও তাকে দমাতে পারেনি। দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ও অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি গড়ে তুলেছেন এক অনন্য সংগ্রামের গল্প।
স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে রেজাউল করিমের প্রতিদিনের জীবন এক বিরামহীন লড়াই। কাটাখালীর মেইন রোডের পাশে প্রতিদিন বসেন তিনি, পাশে একটি গামলা। ঝড়-বৃষ্টি, তীব্র রোদ কিংবা শীতের হিমেল হাওয়া—কোনো বাধাই তাকে থামাতে পারে না। গলায় সুর তুলে তিনি গান গেয়ে মানুষের মনে আনন্দ ছড়িয়ে দেন, হাসি ফোটান অসংখ্য মুখে। সেই গান গেয়ে পাওয়া সামান্য আয় দিয়েই চলে তার সংসারের খরচ।
রেজাউল করিম শুধু একজন গায়ক নন, তিনি এক দুর্লভ মানবিকতার প্রতীক। নিজের অভাব-অনটন ভুলে তিনি অন্যদের আনন্দ দেওয়াকে জীবনের অংশ করে নিয়েছেন। তবে তার স্বপ্ন আরও বড়—নিজের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষিত করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা। তিনি চান, তার সন্তানরা যেন সুস্থ-সবল ও শিক্ষিত নাগরিক হয়ে দেশের জন্য অবদান রাখতে পারে।
কিন্তু চরম দারিদ্র্য ও আর্থিক সংকট সেই স্বপ্নপূরণের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি বলেন—আমার সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য, তাদের শিক্ষার জন্য, আমাদের বেঁচে থাকার জন্য—দয়া করে পাশে থাকুন। সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। এলাকাবাসীর মতে, রেজাউল করিম শুধু একজন সংগ্রামী মানুষ নন, তিনি মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রতিকূলতার মাঝেও তিনি নিজেকে ভেঙে পড়তে দেননি, বরং প্রতিদিন সংগ্রাম করে নিজের পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখছেন এবং স্বাবলম্বী করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মানবিক সহায়তার জন্য যে কেউ সরাসরি কাটাখালি বাজারে গিয়ে রেজাউল করিমের সাথে দেখা করতে পারেন অথবা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন।
মানবতার জয় হোক—একটি পরিবারকে স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে দিতে আমরা সবাই এগিয়ে আসি।