মাদারীপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চুরির অপবাদ দিয়ে মব তৈরী করে ঘর থেকে তুলে নিয়ে এক ফেরিওয়ালার দু’চোখ উৎপাটনের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাকির শেখ (৫০) নামে ভুক্তভোগী সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের ‘পশ্চিম মাঠ বাঘাবাড়ি’ এলাকায় ওয়াজেদ শেখের ছেলে। আহত জাকিরের পরিবারে তার স্ত্রীসহ ৯ সন্তান রয়েছেন। জাকির বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ফেরি করে কসমেটিকস বিক্রি করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে স্থানীয়রা চোর সন্দেহে দুইজনকে আটক করেছিলেন। পরে রবিবার (১০ আগস্ট) সকালে মব তৈরী করে ৪০-৫০ মিলে জাকিরকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে খেজুর গাছের কাটাদিয়ে খুঁচিয়ে চোখ নষ্ট করে ফেলার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথম মাদারীপুর সদর হাপসাপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী জাকির শেখের স্ত্রী ঝিনুক বেগম অভিযোগ করে বলেন, শনিবার রাতে সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের ‘পশ্চিম মাঠ বাঘাবাড়ি’এলাকায় চোর সন্দেহে একই এলাকার আলতা মাতুব্বরের ছেলে ইস্র্রাফিল মাতুব্বর (৪০) ও শ্রীনদী রায়েরকান্দি গ্রামের সিরাজ শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার (২৫) নামে দুই যুবককে গণপিটুনী দেয় স্থানীয়রা
পরে এই ঘটনাকে ব্যবহার করে পূর্ব শত্রুতার জেরে রবিবার সকালে ঘর থেকে ফেরিওয়ালা জাকির শেখকে তুলে নিয়ে যায় একই এলাকার কোহিনুর, কামাল, সজিব, ওমর, শফিকুলসহ বেশ কয়েকজন। পরে খেঁজুর গাছের কাটা দিয়ে জাকির দু’চোখ ক্ষতিগ্রস্থ করে তারা। চেষ্টা করা হয় চোখ উৎপাটনের। জাকির ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় হালমাকারীরা। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জাকিরকে ফাঁসাতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
স্থানীয় বাসিন্দা ফয়সাল বাপ্পী জানান, শনিবার রাতে চুরির ঘটনা ঘটেনি। চুরির অপবাদ দিয়ে জাকিরের চোখ তুলে ফেলার চেষ্টা করে। মূলত পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই এই কাজ করেছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যদি কেউ পূর্ব শত্রুতার জেরে জাকির শেখের দুচোখ ক্ষতিগ্রস্থ করে তাহলে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। চুরি করতে গিয়ে কোন ব্যক্তি আটক হলে তাকেও মারধর করার কোনো সুযোগ নেই। ঘটনাটি আমরা গভীরভাবে তদন্ত করছি। এর পেছনের কারণও অনুসন্ধানের চেষ্টা করছি। কেউ যদি ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য এমন কর্মকান্ড করে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।