মাদারীপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করলে চারটি বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলাকারীরা হামলার সময়ে হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় এলাকাটিতে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাটি সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলের হোগল পাতিয়া গ্রামে ঘটেছে। এলাকাটি দুর্গম চরাঞ্চলে হওয়ায় চরের বাসিন্দারা রয়েছে চরম আতঙ্কে। নদী এবং কাচা রাস্তা পাড় হয়ে ওই চরাঞ্চলটি যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এতে এই এলাকাটিতে গড়ে উঠেছে সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রাম। সেই কারণে চরাঞ্চলটিতে চাঁদাবাজির ঘটনাও ঘটছে অহরহ। স্থানীয়দের দাবি ওই এলাকাটিতে এখান পুলিশ যেতেও ভয় পায়। স্থানীয়দের দাবি করেছেন এলাকা থেকে প্রতি রাতে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছে ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আবুল। বালু উত্তোলনের ফলে আড়িয়াল খাঁ নদে সম্প্রতি ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই কারণে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করেন চরের বাসিন্দারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলের মানুষ চাঁদা না দেয়ায় ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের নেতৃত্বে শামিম আকন, মিরাজ আকনসহ ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য শুক্রবার রাতে দুর্গম চরের বাসিন্দা আক্তার ব্যাপারী, গিয়াস বেপারী ও জলিল বেপারীর পরিবারের চারটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চলায়। এসময়ে অর্ধশত বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায়। এসময় তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুটে নেয়েছে । হাতবোমার বিস্ফোরণে আশপাশের এলাকাটিতে এখন চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ক্ষতিগ্রস্ত আক্তার বেপারী বলেন, ওরা অতর্কিতে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে সব কিছু লুট করে নিয়ে গেছে। বোমা নিক্ষেপ করেছে। আমাদের কাছে কোনো নিরাপত্তা নেই, প্রশাসনের কাছে আমরা বিচার চাই।
চরের এক নারী জানিয়েছেন, দলবেঁধে ৭০-৮০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল এসে প্রথমে পাশে বোমা বিস্ফোরন ঘটায়। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরপর বাড়ির পুরুষ সদস্য পালিয়ে প্রানে বাঁচে। তারপর চালায় লুটপাত ও ভাঙচুর। এরা প্রতিদিন নদী থেকে লাখ লাখ টাকার অবৈধ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে।
তবে নানা অভিযোগের বিষয় বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বাড়ি গেলে তখন তাকে পাওয়া যায়নি। তার ফোনও বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ওসি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, খবর পাওয়ার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।