পাংশায় খাবারের টাকা আত্মসাৎসহ পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠানে প্রবাসী ও এনজিও পরিচালককে অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১৮ জুন , ২০২৫ ১৪:৩৯ আপডেট: ১৮ জুন , ২০২৫ ১৪:৩৯ পিএম
পাংশায় খাবারের টাকা আত্মসাৎসহ পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠানে প্রবাসী ও এনজিও পরিচালককে অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

রাজবাড়ীর পাংশায় প্রকৃত কৃষক ছাড়াই প্রবাসীব্যবসায়ীএনজিও পরিচালকগৃহিণীমুদি দোকানিভ্যানচালক  শিক্ষার্থীদের নিয়ে পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে  অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবারের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে কৃষি কর্মকর্তার বিচার দাবি করেছেন প্রকৃত কৃষকরা।

জানা যায়উপজেলায় মোট ৪৯,৯৩২ জন কৃষক রয়েছেন। অথচ কৃষকদের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণে কৃষকের পরিবর্তে প্রবাসীব্যবসায়ীএনজিও পরিচালকগৃহিণীমুদি দোকানিভ্যানচালক  শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করিয়েছেন উপজেলা কৃষি দপ্তর। ফলে প্রশিক্ষণ থেকে বাদ পড়েছেন উপজেলার প্রকৃত কৃষকরা।উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃক প্রদত্ত পার্টনার কংগ্রেসে অংশগ্রহণকারী কৃষক-কৃষাণীর নামের তালিকা অনুযায়ী খোঁজ নিয়ে দেখা যায়অংশগ্রহণকারী ৭০ জনের মধ্যে ঠাঁই পেয়েছেন প্রবাসীব্যবসায়ীএনজিও পরিচালকগৃহিণীমুদি দোকানিভ্যানচালক  শিক্ষার্থী। প্রশিক্ষণ শেষে তাদেরকে সম্মানী বাবদ নগদ ৫০০ টাকা  দুপুরের খাবার প্রদান করা হয়। খাবারের মধ্যে ছিল একটি ডিমদুই পিস খাসির মাংসের বিরিয়ানি এবং একটি ২৫০ মিলি কোমল পানীয়।

সূত্র জানায়খাবারের জন্য জনপ্রতি ৫০০ টাকা বরাদ্দ ছিল। পাংশা বাজারের হোটেলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়ডিমসহ দুই পিস খাসির মাংসের বিরিয়ানির দাম ২২০ থেকে ২৫০ টাকা এবং ২৫০ মিলি কোমল পানীয়র দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা। অর্থাৎ খাবারের জন্য বরাদ্দকৃত ৫০০ টাকার মধ্যে ২৭০-২৮০ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। বাকি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ।

পার্টনার কংগ্রেসে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে নিজাম উদ্দিন জানানতিনি একজন সার  কীটনাশক ব্যবসায়ী। সাহিদা খাতুন জানানতিনি একজন গৃহিণী। শামীমা নাসরিন জানানতিনি দুটি এনজিওর পরিচালক। রাসেল জানানতিনি কুয়েত প্রবাসী। মোসিরাজুল ইসলাম বলেনতিনি মুদি দোকানি  টেলিকম ব্যবসায়ী। স্বপন কুমার শাহ জানানতিনি একজন ভ্যানচালক। হাসিবুর রহমান জানানতিনি পাংশা সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তারা আরও জানানখাবারের জন্য ৫০০ টাকা বরাদ্দের কথা তাদের জানানো হয়নি। যে খাবার দেওয়া হয়েছেতার বাজারমূল্য সর্বোচ্চ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

জানা গেছেপার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠানে পাংশার হাজি বিরিয়ানি থেকে খাবার সংগ্রহ করা হয়। হাজি বিরিয়ানির স্বত্বাধিকারী ইউসুফ বলেনকৃষি অফিসার আমাকে ডেকে নিয়ে খাবারের অর্ডার দেন। একটি ডিমদুই পিস খাসির মাংস  একটি কোমল পানীয়সহ খাবারের দাম নির্ধারণ করা হয় ২৮০ টাকা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, "আমরা শুধু কৃষককেই আমন্ত্রণ জানিয়েছি। ভ্যানচালক কেন আসবেএখানে আমাদের কৃষকরাই ছিল। আমরা শুধু কৃষককেই দাওয়াত দিয়েছি।খাবারের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, "আপনি যেটা বলেছেন সেটা সঠিক নয়। আমাদের সরকারি যে বাজেট আছেসেই বাজেটের মধ্যেই খাবার দেওয়া হয়েছে।"

জানা গেছে ধরনের কংগ্রেসে প্রশিক্ষণে ফসল উৎপাদনকারী কৃষকদের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনকৃষি উদ্যোক্তা তৈরিকৃষি পণ্যের টেকসই ভ্যালু চেইন সৃষ্টিঅধিক ফলন উৎপাদনপ্রযুক্তির ব্যবহারনিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ ফলজ  সবজি খামার গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।উল্লেখ্যগত ২৬ মে সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশনএন্টারপ্রেনারশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ প্রোগ্রামের আওতায় পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo