শিবগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পরিকল্পিত হামলায় নিহত ১, আহত অন্তত ৬

মোঃ মাইনুল ইসলাম প্রকাশিত: ১৭ জুন , ২০২৫ ১৬:৫৯ আপডেট: ১৭ জুন , ২০২৫ ১৬:৫৯ পিএম
শিবগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পরিকল্পিত হামলায় নিহত ১, আহত অন্তত ৬

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে সংঘটিত এক হামলায় রফিকুল ইসলাম কালু (৫০) নামের একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ছয়জন গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। গত ৯ জুন রাত ৮টার দিকে পাঁকা ইউনিয়নের বাবুপুর চালকিপাড়া গ্রামে ইমন মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মামলার বাদী নিহত রফিকুলের চাচাতো ভাই মো. সাইদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ওই রাতে তিনি ও তাঁর স্বজনেরা মিলের সামনে বসে থাকাকালে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি দলবদ্ধ হয়ে ধারালো অস্ত্র ও রড নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা প্রথমে গালিগালাজ ও পরে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। সাইদুলের দাবি, হামলায় তাঁর ভাই, ভাতিজা ও চাচাতো ভাইসহ মোট সাতজন আহত হন। গুরুতর আহত রফিকুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ জুন বিকেলে তিনি মারা যান। সাইদুল ইসলাম আরও জানান, হামলাকারীদের হাতে ছিল হাসুয়া, লোহার রড, কাতা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র। তাঁর দাবি, অভিযুক্তরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যেই হামলা চালিয়েছিল। নিহতের স্ত্রী লিলিয়ারা বেগম বলেন, একটি জমি নিয়ে বিরোধ ছিল, যা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়েছিল। তারপরও পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই—দোষীদের ফাঁসি চাই। রফিকুলের মেয়ে লিমা বলেন, সরকারের কাছে দাবি করছি, আমার বাবার হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। এজাহারভুক্ত ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২০–২৫ জনের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন সাইদুল ইসলাম। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, হামলায় অংশ নেওয়া কয়েকজন রফিকুলকে মাথায় কুপিয়ে, রড দিয়ে পায়ে আঘাত করে এবং একপর্যায়ে বুকের ওপর উঠে শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্টাও করে। নিহতের জামাতা মো. মোস্তাক হোসেন বলেন, হামলায় ছয়জন আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ রোসদুল হক বলেন, জমি নিয়ে সমস্যা থাকতেই পারে, তাই বলে এভাবে পরিকল্পিতভাবে কাউকে হত্যা করা অমানবিক। অভিযুক্তদের শাস্তি হওয়া উচিত। তবে এ ঘটনায় কোন পক্ষের বাড়ি ঘরে হামলা এবং লুটপাট হয়নি । স্থানীয় আরেকজন, সেরাজুল ইসলাম বলেন, রফিকুলকে বড় বড় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি। বিবাদীপক্ষের  অভিযুক্ত আহসান আলীর ছেলে পারুল হকের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। থানার ওসি (অপারেশন) শাকিল আহমেদ বলেন, মামলার ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলা তদন্তাধীন রয়েছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo