রাজশাহীতে আলুর ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের অবসান, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে কেজিপ্রতি সাড়ে ৫ টাকায় সমঝোতা

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১৭ জুন , ২০২৫ ১৪:৫৯ আপডেট: ১৭ জুন , ২০২৫ ১৪:৫৯ পিএম
রাজশাহীতে আলুর ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের অবসান, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে কেজিপ্রতি সাড়ে ৫ টাকায় সমঝোতা

রাজশাহীতে দীর্ঘদিন ধরে চলা আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকদের মধ্যে ভাড়া নিয়ে চলমান উত্তেজনার অবসান ঘটেছে। সেনাবাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপে সোমবার (১৬ জুন) ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে কেজিপ্রতি আলুর সংরক্ষণ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এ সিদ্ধান্তে উভয়পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
দীর্ঘ বৈঠকে ঐকমত্য
রাজশাহী সেনানিবাসে সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলে এই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক। এতে অংশ নেন রাজশাহী কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলুর রহমান, রাজশাহী জেলা আলু চাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আহাদ আলী, সহসভাপতি আলম আলীসহ উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা। সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করেন।
বৈঠক শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সবাই রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। সেখানে ভাড়া নির্ধারণের বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়।
সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান,
এখন থেকে প্রতি কেজি আলুর সংরক্ষণ ভাড়া হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা।
প্রতিকেজি শ্রমিক খরচ হিসেবে সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা অতিরিক্ত নেওয়া যাবে।
আগাম বুকিং করা আলুগুলোর ক্ষেত্রে পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া প্রযোজ্য হবে। তবে সেই ক্ষেত্রেও শ্রমিক খরচ হিসাবে ৫০ পয়সা আদায় করা যাবে।
উল্লেখ্য, গত বছর পর্যন্ত প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের দিতে হতো ৪ টাকা। এবার আলু উঠার সময় হিমাগার মালিকরা হঠাৎ করেই ভাড়া বাড়িয়ে কেজিপ্রতি ৮ টাকা নির্ধারণ করে দেন। এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় চাষিরা ও ব্যবসায়ীরা লাগাতার বিক্ষোভ শুরু করেন।
তারা দাবি তুলেন—অতিরিক্ত ভাড়া কৃষকের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা আলু বিক্রিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
চেম্বার অব কমার্সের সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্ধারিত নতুন ভাড়া সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি রাজশাহীর প্রতিটি হিমাগারে প্রচার করা হবে। কেউ এর ব্যত্যয় ঘটালে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়।
ভাড়া নির্ধারণের এই সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়ে রাজশাহী জেলা আলুচাষি সমবায় সমিতির সভাপতি আহাদ আলী বলেন,
“আমরা চাইছিলাম যৌক্তিক একটা ভাড়া, যা কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়ের জন্য গ্রহণযোগ্য হয়। সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় সেটা সম্ভব হয়েছে। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সবাই সম্মত হন যে, ভবিষ্যতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণের বিষয়ে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা এবং আগাম মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি আরো শক্তিশালীভাবে প্রণয়ন করা হবে, যেন কৃষক ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন না হয়।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo