নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলা ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড, দক্ষিণ মইশাই গ্রামে এক অসহায় সন্তানের আর্তনাদ ফেইসবুকে পোস্ট করেন।
“এই কাপুরুষটি আমার বাবা। ছেলে-মেয়ে জন্ম দিতে পারলেও ঠিকমতো চালাতে পারে না। তিনদিন ধরে আমাদের ঘরে চাউল নেই, বাজার নেই,আর সে মোবাইলে জুয়া খেলে আর মদ খেয়ে পড়ে থাকে…”
এ যেন এক চরম মানবিক বিপর্যয়,এক পরিবারের ধ্বংস হয়ে যাওয়ার করুণ দলিল।
নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড, দক্ষিণ মইশাই গ্রামের বাসিন্দা মৃত জয়নালের ছেলে ইব্রাহিম খলিল-এক সময়ের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। কিন্তু আজ, সে এক আত্মমর্যাদাহীন, আসক্তি ও সহিংসতার প্রতীক।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ছবিতে দেখা যায়, ইব্রাহিম খলিল মদের বোতল হাতে, সিগারেট টানছে, আবার কোথাও গলায় বোতল ঠেকিয়ে মদ পান করছে। অভিযোগ রয়েছে-সে প্রতিদিন মোবাইল ফোনে জুয়া খেলে, মাদক সেবন করে এবং নেশার ঘোরে তার স্ত্রী ও সন্তানদের ওপর চালায় অমানবিক নির্যাতন। এমনকি খাবারও আনেনি তিনদিন ধরে।
এলাকাবাসীর আতঙ্ক আর নীরবতা
মইশাই গ্রামের একাধিক সচেতন নাগরিক (যারা নিরাপত্তার জন্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানিয়েছেন, ইব্রাহিম খলিল দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা, মদ এবং জুয়ার সঙ্গে জড়িত। তার সন্ত্রাসী আচরণে গ্রামের সাধারণ মানুষ মুখ খোলার সাহস পায় না। স্থানীয় স্কুলপড়ুয়া শিশু-কিশোরদের মাঝেও তৈরি হয়েছে ভয়ানক এক বার্তা-“নেশাগ্রস্ত বাবার ভয়ে সন্তানকেও সামাজিক মাধ্যমে যেতে হয় সাহায্য চাইতে!”
প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন
এই ঘটনায় পরিবারটির সন্তান সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করে আবেদন জানিয়েছেন-“আমাকে ও আমার মাকে বাঁচান”। এ যেন এক বিপন্ন কণ্ঠের আর্তনাদ, যা কাঁপিয়ে দেয় বিবেকবান প্রতিটি হৃদয়কে।
আমরা সচেতন মহলের-এর পক্ষ থেকে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার,সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি), স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-তাঁদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, দয়া করে এই পরিবারের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিন।
এই ব্যর্থ পিতার বিরুদ্ধে মাদক, পারিবারিক সহিংসতা ও জুয়া সংক্রান্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
সমাজ কী বলছে?একজন সচেতন নাগরিক মন্তব্য করেন-
“যে সন্তান সামাজিক মাধ্যমে বাবার বিরুদ্ধে লিখতে বাধ্য হয়, বুঝতে হবে-সেখানে নীরবতা মানেই অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান। প্রশাসনের উচিত এ ধরনের বিকৃত পুরুষদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।”
প্রতিবেদকের মন্তব্য:এটা শুধু একটি পরিবারের আর্তনাদ নয়, বরং গোটা সমাজের জন্য এক সতর্কবার্তা।
আমরা কি মুখ ফিরিয়ে থাকব? নাকি সোচ্চার হবো অন্যায়ের বিরুদ্ধে?