সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচন ঘিরে পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে রাজনৈতিক মাঠে সরব হয়ে উঠেছেন বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীরা। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় হয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তারা।
এই প্রতিযোগিতামূলক প্রেক্ষাপটে বিএনপির পক্ষ থেকে একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। তবে তাদের কার্যক্রমে দেখা যাচ্ছে অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের ঘাটতি ও তৃণমূলে বিভক্তির আভাস। এক আসনে চারজনের বেশি সম্ভাব্য প্রার্থীর পৃথক গণসংযোগ ও শো-ডাউন জনমনে দ্বিধা তৈরি করেছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন ৩টি গরু কোরবানি দিয়ে গরীবদের মাঝে মাংস বিতরণ করেন এবং একাধিক ইউনিয়নে শো-ডাউন ও ক্রীড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিতি দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দেন। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য একেএম ইঞ্জিনিয়ার ফারুক আহম্মেদ তালুকদার, সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদার এবং কেন্দ্রীয় কৃষকদলের যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটু নিজ নিজ অনুসারীদের নিয়ে পৃথকভাবে মাঠে সক্রিয় থাকলেও পারস্পরিক সংযোগের অভাব স্পষ্ট।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ব্যতিক্রমধর্মী পরিকল্পনা ও গোছানো কর্মসূচির মাধ্যমে জনসংযোগে চমক সৃষ্টি করেছেন। তিনি ১১টি গরু কোরবানি দিয়ে প্রায় দেড় হাজার অসহায় মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করেন।
এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত বিভিন্ন সমাবেশ ও হাটবাজারে ব্যাপক লিফলেট বিতরণ, গনসংযোগ এবং শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক ডকুমেন্টারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আলোচনায় উঠে আসেন। বাউফল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে তিনি ২৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থীদের মাঝে নোটপ্যাড, বই, ব্যাগ, কলম, নারীদের হিজাব ও পুরুষদের গেঞ্জি বিতরণ করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, বিএনপির প্রার্থীরা যেখানে এখনও অভ্যন্তরীণ সমন্বয়হীনতায় ভুগছেন, সেখানে মাসুদের পরিকল্পিত ও সংগঠিত কার্যক্রম রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।এখন দেখার বিষয়, ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে—এ মাঠের ‘গোছানো জনসংযোগ’ এবং ‘বিভ্রান্ত প্রচারণা’-র মধ্যে কোন কৌশল শেষ পর্যন্ত কার্যকর হয়।